বাড়ি
সহজ করে লিখছি বসে কঠিন করোনায়, এ দু’টি চোখ ফের যেন হায় তোমার দেখা পায়।
যেমন করে নৌকা ভাসে নতুন পানি পেয়ে, ফর্সা জলে তৈরি করে ঢেউ, জলের নিচে দেহ নাড়ায় জলের সবুজ ঘাস, মাছগুলো সব সাঁতার কাটে খুব গোপনে, জোড়ায় জোড়ায়, শান্ত হাওয়া বয়, তেমন করে পড়ছে মনে, তেমন করে ভাসছে মনে, থাকছি বসে চুপ, তোমারও কি আমার কথা পড়ছে মনে খুব!
মনে রেখো মনে রেখো লিখছি বসে রোজ, ও পাতা গাছ, সময় করে একটু নিও খোঁজ। একটু না হয় জানিয়ে দিও তোমার আমি হই, বাড়িছাড়া হলেই বুঝি বাড়িছাড়া হই!
দেশের বাড়ি
দেশের বাড়ি কই গো তোমার, দেশের বাড়ি কই? প্রশ্ন করে হাওয়া বাতাস, প্রশ্ন করে পাড়াপড়শি, আমি কেনো পরের বাড়ি রই!
আমার দেশের বাড়ি একটি জবা গাছ। আমার দেশের বাড়ি একটি আতা গাছ। আমার শরীর জুড়ে পুষ্প চাঁপার ঘ্রাণ। জুঁই চামেলির মালা। আমার শরীর জুড়ে টেঁপি ধানের মৌ। পৌষ পাবনের পালা।
সবুজ ধানের ক্ষেত গো আমার মাষকলাইয়ের ক্ষেত, পাকা ধানের ক্ষেত গো আমার সোনা রঙ্গা বুক, কলার ঝাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা মায়ের জবা মুখ, বোনের মায়া, বাবার আদর, সব হারানোর দুখ।
এই তো আমার দেশের বাড়ি। এই তো আমার সুখ। তবু কেনো পাইলে লোকে জিগায় পইপই, দেশের বাড়ি কই গো তোমার, দেশের বাড়ি কই?
পরিচয়পত্র
চায়ের দেশের লোক গো আমি চায়ের দেশের লোক, হাওর-বাওর জলের মানুষ গানে ভরা বুক।
সবুজ কুঁড়ির দেশ গো আমার সবুজ কুঁড়ির দেশ, তোমায় রেখে তোমায় ভুলে কেমনে থাকি বেশ! তোমার কথা তোমার হাসি তোমার মনুর ঢেউ, জগত ঘুরে অনেক খুঁজে দেয়নি তো আর কেউ। বাইকা বিলে জলের পাখি জলের ভাসা নাও, কানাই ফুলে রোদের হাসি আর কি কোথাও পাও?
শীতল পাটির দেশ গো আমার শীতল পাটির দেশ, তোমায় ছাড়া দূর বিজনে আউলাইল মাথার কেশ।
মুজিব ইরম-কবি