স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও ১৯৭১ এর জনযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে এখনো গবেষনা চলছে। বিশেষ করে মৌখিক ভাষ্যের থেকে লিখিত ইতিহাস। যে ইতিহাস আমাদের মুুক্তিযুদ্ধের অজানা ভাষ্যের সত্য ইতিহাসের স্থায়ী রূপ। হয়তো আরও কিছুদিন গেলে আমরা এই মৌখিক ইতিহাসের ব্যক্তিকেও হারিয়ে ফেলবো। ইতোমধ্যে আমরা অনেক সংগ্রামী মানুষকে হারিয়ে ফেলেছি। তার মধ্যে কারোও কারোও ইতিহাস লিখিত রূপ পেয়েছে আবার বড়ো একটি অংশের ইতিহাস আমরা এখনো স্থায়ী রুপ দিতে পারিনি। তেমনি একটি তথ্য নির্ভর শিকড়সন্ধানী গ্রন্থ ইমাম মেহেদী’র মুক্তিযুদ্ধে কুষ্টিয়ার নারী।গ্রন্থটি ২০১৮সালে প্রকাশিত হয়েছে বহুলাবাংলা প্রকাশন থেকে। গ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছে একাত্তরের জননী খ্যাত রমা চৌধুরী ও বীরপ্রতীক তারামন বিবিকে । এই গ্রন্থটির মুখবন্ধ লিখেছেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাবেক সাংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর গ্রন্থটির নামকরণ উদ্দেশ্য ও ভূমিকা লিপিকারের পরিচয়ের মাধ্যমে আমরা ইতোমধ্যে আঁচ করতে পেরেছি যে গ্রন্থটি ১৯৭১ সালের আঞ্চলিক ইতিহাস গ্রন্থ। আঞ্চলিক ইতিহাস আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অনবদ্য অংশ। যে ইতিহাস বহুবছর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের বাইরে ছিল। গবেষক প্রথমেই “লেখকের কথা” অংশে উল্লেখ করেছেন- এখন মুক্তিযুদ্ধের মৌখিক ইতিহাস থেকে লিখিত ইতিহাস রচনা চলছে। স্বাধীনতার ইতিহাস আমাদের তরুন প্রজন্মের কাছে অনেক দেরিতে পৌঁছেছে। এখান থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, বহুবছর আমরা সত্য ও প্রকৃত ইতিহাস থেকে দূরে থেকেছি। স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনৈতিক সংকট জাতির পিতা ও জাতীয় চার নেতার হত্যা, স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে স্বাধীন পতাকাসহ নানাবিধ কারনে আমাদের ভাষা ও স্বাধীনতর ইতিহাস বিকৃতি চলেছে। শুধু বিকৃত ইতিহাসই-আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি। বরং সত্য ইতিহাসকে চাপা দেওয়ার সকল ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে ইতিহাস তার সঠিক পথেই প্রবাহিত হয়ে থাকে এটা চিরন্তন সত্য।
মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর কুষ্টিয়া ছিল ৮ নং সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ। স্বাধীণ সার্বভৌম বাংলার ইতিহাসের সঙ্গে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার জনপদের মানুষের অংশ গ্রহণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। ১৯৭১ সালের ১৭ ই এপ্রিল বৈদ্যনাথ তলার শপথ গ্রহনের মাধ্যমে সে হাজার বছরের ইতিহাস স্থায়ী রূপ লাভ করে।
এবার আসি গবেষকের গ্রন্থটির মূল আলোচনায় -১৯৭১ এর জনযুদ্ধের নারীর অংশগ্রহণ ছিল বহুমাত্রিকভাবে। আমরা যদি ১৯৭১ সালের ১১ই এপ্রিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে মুজিব নগর সরকারের প্রধান মন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্যে আলোকপাত করি তাহলে দেখবো প্রথমেই তিনি উচ্চারণ করেছেন “স্বাধীন বাংলাদেশের বীর ভাই ও বোনেরা”- তাহলে আমরা দেখতে পাই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুদ্ধ কালীন প্রধান মন্তীর বক্তব্যে তিনি নারীদেরকে ও আহবান ও অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এখানে নারীর অংশগ্রহণের সক্রিয় আহ্বান রয়েছে। আমরা যদি মুজিব নগর সরকারের সদস্যবৃন্দের দিকে আলোকপাত করি সেখানে কোন কোন নারীর অংশ গ্রহণ নেই। যদি ও যুদ্ধকালীন সময়ে নারীর অংশ গ্রহণের মতো পরিবেশ ও পরিস্থিতি ছিল না। গবেষক সে বিষয়ে সুন্দর ও বস্তুনিষ্ঠ ভাবে তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেছেন।
আবার আমরা যদি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ব্যরিষ্টার আমীরুল ইসলামের বক্তব্যে দৃষ্টিপাত করি তবে দেখবো তিনি নারীর গৌরবময় ইতিহাসের কথা দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেছেন। ইমাম উদ্দীনের স্ত্রী খুব সাহসী মহিলা বাড়িতে তিনি একা ইমাম উদ্দীন বাড়িতে নেই তিনি সংগ্রাম পরিষদের নেতা কর্মীদের নিয়ে আশ পাশের পুলিশ ও বিডিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন আবার রান্না করে সবার খাবার ব্যবস্থা করেছেন।”
আবার আমরা যদি কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত ‘যুদ্ধ’ উপন্যাস বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেছেন।
-যুদ্ধ ? মাখন বিষণ্ণ দৃষ্টিতে নিজের পায়ের দিকে তাকায়।
-কী ভাবছ ? পায়ের কথা ?
-যুদ্ধে আমি পা হারালাম।
-তাতে কী হয়েছে ? যুদ্ধ এমনই হয়। মেয়েরা তো যুদ্ধ ক্ষেত্রে গিয়েও অঙ্গ হারায়।
-কিভাবে ?
-ধর্ষিত হলে ওদের গর্ভ হয়। সেটা মাতৃত্বের গর্ভ না । সেটা জরায়ুর জখম।
ওই একই ‘যুদ্ধ’ উপন্যাসের আরেক সংলাপে-
‘রেনু বলে, ভালো কনরা দেখো হামাক। তুমহি দেছো পা। হামি দিছি জরায়ু। তোমা পায়ে ঘা শুকিয়ে গেছে। কয়দিন পর হামার ও জরায়ুর ঘা শুকিয়ে যাবে। ………. স্বাধীনতা কি সোজা কথা ? স্বাধীনত কত কিছু নেয়। হের লাইগে মন খারাপ করবো ক্যান হে ? পৃষ্ঠা নং ২৪
১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত গেজেটে বীরপ্রতীক পদবীতে ভূষিত তারামন বিবির নাম আছে। রাষ্ট্র তাঁকে আবিষ্কার করলেন সাংবাদিক ও গবেষক বিমল কান্তিদের মাধ্যমে ১৯৯৫ সালে । এক্ষেত্রে গবেষক বিমল কান্তিদের ১৯৮৭ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা সনাক্ত করার উদ্যোগ প্রশংসনীয় যখন তারামন বিবিকে পাওয়া গেল তখন তিনি রুগ্ন অসুস্থ যক্ষা রোগে আক্রান্ত। অথচ তিনি দেশের ভিতরে কমপক্ষে তিনটি যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯৫ সালের ১৫ ই জানুয়ারী জানা গেল মুক্তিযোদ্ধা কাকন বিবির কথা। ২৩ বছর রাষ্ট্র তাকে খুঁজে পায়নি । অথচ এলাকায় তিনি মুক্তিযুদ্ধের বেবি নামে সমধিক পরিচিত। এবার আসি মুক্তিযুদ্ধের কুষ্টিয়ার নারীর অংশগ্রহণ, অবদান ও নির্যাতনের ইতিহাসের আলোচনায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাঃ আরজুমান বানুর বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার মীলপুর উপজেলার সদরপুর গ্রামে। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে পরিবারের সহযোগিতায় তিনি ভারতে গেলেন মুক্তি যুদ্ধ শুরু হলে শরণার্থী ও আহত যোদ্ধাদের সেবার জন্য নির্মিত ভারতের করিমপুর জয়বাংলা হাসপাতালে ডাঃ আলী হোসেনের নেতৃত্বে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তখন তার বয়স মাত্র ১৪ বছর পেরিয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা লুলাই জান্নাত ও লুসাই ফেরদৌস অপর দুই বোন ১৯৭১ সালের কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হলে ৬ এপ্রিল পিতার সাথে ভারতে প্রবেশ করলেন। চারদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর খুন ধর্ষণ হত্যা পাশবিক নির্যাতন ও শরণার্থীদের সেবায় ভারতের শান্তি নগরে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে ভারত সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধিনে রিক্রুটমেন্ট মেডিকেল এ্যসিসটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। এই দুটি কন্যাকে ৭১ এর অগ্নি কন্যা বলা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোমেনা খাতুন, দোলজান নেছা, এলেজান্নেসা, মাসুদা খাতুন। এই চার বিদূষী মহান মুক্তিযুদ্ধে সমভ্রম হারিয়েছিলেন। যুদ্ধের অন্যতম একটি হাতিয়ার হলো নারী-নির্যাতন ও ধর্ষণ। শাসক শ্রেণীরা তাদের নানা অপরাধের পাশাপাশি ধর্ষণকে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী তার ব্যতিক্রম নয়। এ দেশে হাজার হাজার নারীদের পাশবিক নির্যাতন করেছে ৭১ সালে। সম্ভ্রম হারিয়েই এই চার নারী জীবন যন্ত্রনা থেমে থাকেনি স্বাধীনতা পরবর্তী বহুবছর সামাজিক পারিপার্শ্বিকভাবে তারা ধর্ষণের চেয়ে ও ভয়ংকর রূপে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন । বিশেষ করে ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত গণআদালতে স্বাধীনতা বিরোধীদের বিপক্ষে ভূক্তভোগী হিসেবে স্বাক্ষ্য দেওয়ার ফলে সমাজ তাদের এক ঘরে করে রেখেছিল। যদিও ১৯৯৮ সালে গণভবনে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই চার বীর নারীকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন। এবং আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। তখন তারা পূনরায় স্বাভাবিক জীবনের চেষ্টা করেছিলেন। গবেষক কাব্য উপন্যাস অনুসন্ধানকরে এই চার বীর নারীর সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই ছবি গ্রন্থটিতে সংযোজন করেছেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বীর যোদ্ধা নারী রাবেয়া খাতুন ও ৭১ সালে নির্যাতিত হয়েছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। স্বাধীন দেশে তিনিও বহুরকম লাঞ্চনা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীসময়ে সম্ভ্রম হারানো নারীদের সরকার শুধু বীরঙ্গনা উপাধীতে ভূষিত করে অনেকাংশে দায় এড়িয়েছে । যদিও বহু বছর পর তাঁরা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট ভূক্ত হয়েছেন। রাষ্ট্র তাদের সম্মান ও স্বীকৃতি দিয়েছেন। যা একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ গবেষক সাক্ষাতকার ভিত্তিতে ও বিভিন্ন আঁকার গ্রন্থ থেকে সেই তথ্য উপাত্তের বর্ণনা তুলে ধরে গ্রন্থটিতে অন্তর্ভূক্ত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে কুষ্টিয়ার নারী গ্রন্থের সাতষট্টি পৃষ্ঠায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ আরা রুমির সংগ্রামী জীবন ভিত্তিক ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। ৭ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় পাকিস্তান ভারত যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। তিনি পরবর্তীতে এই প্রশিক্ষণ ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কাজে লাগান। ৭১ সালে তিনি সক্রিয়ভাবে দেশের ভিতর ও বাইরে মুক্তিযুদ্ধের একজন তরুন সংগঠক হিসেবে প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কুষ্টিয়ার কুমারখালির নারীনেত্রী রওশন আরা বেগম নীলা। ৭১ সালে কুমারখালি কলেজের ছাত্রী ছিলেন কিন্তু ১৯৬৮ সাল থেকেই তিনি স্বাধীকার আন্দোলনে মিছিল মিটিং এ অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৬৮ সালে কুমার খালিতে নির্মিত শহীদমিনার রওশন আরা বেগম নীলাসহ তার বান্ধবীদের সাথে ভাষা শহীদদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সেই ইতিহাস তিনি সাক্ষাৎকার ভিত্তিতে দুষ্প্রাপ্য ছবিসহ সংযোজন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় অবরুদ্ধ অবস্থায় একজন কলেজ পড়ুয়া বালিকার সংগ্রাম, রাইফেল ও গ্রেনেড ছুঁড়ার প্রশিক্ষণ গ্রহনের চিত্র আমরা এখানে লক্ষ্য করি। ইমাম মেহেদীর মুক্তিযুদ্ধে কুষ্টিয়ার নারী গ্রন্থের সকল নারী কিন্তু গেজেট ভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা নয়। যুদ্ধকালীন সময়ের সবাই বাস্তবতা অবরুদ্ধ জন-জীবন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও স্বাধীনতা বিষয়ে বিরোধীদের খুন , ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের মধ্যে বাংলাদেশের সংগ্রামীদের বিভিন্ন বিষয় মৌখিক ইতিহাস থেকে লিখিত রূপ দিয়েছেন। পুরো গ্রন্থটি যেমন ৭১ এর জনযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল ঠিক একইভাবে আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাসের প্রামান্য দলিল । যে গ্রন্থটির মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের মানুষেরা কিঞ্চিৎ পরিমাণ হলেও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ ও নির্মমতা সম্পর্কে জানতে পারবে। হাজার বছরের ইতিহাসে যুগ যুগ ধরে নারীর অংশগ্রহণ সম্পর্কে মূল্যায়িত হবে। গবেষক গ্রন্থ রচনায় তথ্যসূত্র ও সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ইতিহাস গ্রন্থ ম্যাগাজিন, পত্র-পত্রিকা পঠন-পাঠন অনুসন্ধান করেছেন। সেই তথ্য নির্দেশনা ও উক্ত গ্রন্থে নিষ্ঠার সাথে লিপিবদ্ধ করেছেন। গ্রন্থটিতে হয়তো আরোও বিবরণ, তথ্য উপাত্ত এবং বিভিন্ন গ্রন্থে থাকা মুক্তিযুদ্ধে অবদান রয়েছে এমন বীর নারীদের গৌরবময় জীবন বর্ণনা স্থান পেতে পারতো। সে ক্ষেত্রে গবেষককে পরবর্তী সংকলন ও মুদ্রণে যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। উপর্যুক্ত বিষয়ে গবেষক তার অনুসন্ধানী দৃষ্টি দিবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
তবে ভালো লেগেছে এটা জেনে যে, এই গ্রন্থ বর্ণনাটি গবেষক কয়েক বছর সময় নিয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন । বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা লিটল ম্যাগাজিন থেকে তথ্য সংযোজন করেছেন।
গ্রন্থটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী আল নোমান । মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদান বিভিন্ন উপায় যেহেতু সেক্সুয়াল জেনোসাইড থেকে শুর করে আহত ও পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা ও সংগঠকের দায়িত্ব পালন এবং অবরুদ্ধ ৭১ এর বর্ণনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রচ্ছদটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। এই গ্রন্থটির প্রচ্ছদ আরো ও ইতিহাস নির্ভর হতে পারতো। ৮০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থের মূল্য ২০০ টাকা। মুক্তিযুদ্ধে কুষ্টিয়ার নারী ইমাম মেহেদীর ইতিহাস নির্ভর একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ হিসেবে ইতোমধ্যে বিবেচিত হয়েছে। যা আগমী দিনের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মূল্যায়িত হবে বলে আমি মনে করি।
এম ,এ গাফ্ফার মিঠু, এমফিল গবেষক, প্রভাষক বাংলা বিভাগ, রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া।