এলোমেলো নকশার কারুকাজ
তুমি কি চলে যাবে
যাও
আমি বাতাসে ধরে রেখেছি ঠোঁট
আঁধারে আশা
হয়তো কেউ কেউ পথে বেরোয়
মন ছাড়াই
আমি কোথাও কখনও জয়ী হইনি
কোথাও হারিনি
ধারনা করা সহজ আমার ফুলের টব বাতাসে উড়ছে
আমার সাদামাটা নাম যা নিয়ে খেলছে কুয়াশা
সময়ের ওপর জোরাজুরি চলে না
তবে জানা-অজানা কোন কিছু থেকেই
আমি মুখ ফিরিয়ে নিইনে
সাদা কাগজের দেখা পাওয়া কত কঠিন
তুমি কি চলে যাবে
যাও
আমি দেখেছি শালিখের বুকের ওঠানামা
সবুজ ধানে দুধ
জীবন এক ভাবে গড়ে ওঠেনি
জীবন এক ভাবে চলে না
জীবন এক ভাবে থেমে থাকে না
তুমি কি ফিরে যেতে পার
তোমার নিরবতা থেকে তুমি কি বাঁচতে পার
ভোরের উঠোনের আবছা ছায়া
আগুনের চেয়ে কঠোর
তোমার তৃতীয় চোখ
তোমার পৃথিবীতে শোধ নিতে
মরিয়া
আমি দেখেছি একটি রাত
ছিঁড়ে পড়েছে আরেকটি রাতের বোঁটা থেকে
আমি দেখেছি সেই বোঁটায়
পেঁচার পাখনার ছাই
ছোট ব্যাথা হারিয়ে যায় বড় ব্যাথার কাছে
পুরনো সকাল থেকে হঠাৎ ঘ্রাণ ছড়িয়েছে
দেয়ালের লাল কালি
চাষীর উঠোনে পায়রা
পানপাতাদের ক্ষোভে জ্বলছে পানের বরজ
ঘাস কথা বলছে শিশিরের সাথে
সরষের ক্ষেতে নিচু পায়ে হাঁটছে চাঁদ
মা দেখেছে মেয়ের নবিন খোঁপায় প্রজাপতি
তোমার মতো
আমি ওদেরও সব জেনেছি
যত বাহানা তা লুকোনো হাসিতে সহায়
তুমি কি চলে যাবে
যাও
বেঁচে থাকা খুব সহজ না
পাগলামোর দাম আছে
আমি বাতাসে ধরে রেখেছি ঠোঁট
আঁধারে আশা
হয়তো কেউ কেউ পথে নেমেছে
মন ছাড়াই
সন্ধ্যার টেবিলে বিয়ারের গ্লাসগুলা অর চুমুর লাইগা ওয়েট কোর্তেছিল
বিধবা মহিলাটি বাগানের উদাসিনতায় খুবই আহত বোধ করলেন
হাতে তুইলা নিলেন বদরাগী সন্ধ্যাতারাটিকে
আবিষ্কার করলেন অসুস্থ আকাশ
মাইক্রোবায়োলজির বাইরে
এই আকাশ মুঠোভর্তি নুন ছড়ায়ে দিছে সমুদ্রে
কোনটা জানলা কোনটা কীর্তিনাশা নদী
পুয়ের্তেরিকোয় মার্কিন নেভি অফিসার তার সুন্দরী প্রেমিকার রক্ত দিয়া
পেইন্টিং কোর্ছে
এইটা কোন ব্ল্যাক কম্যুনালের জন্য বড় ধাক্কা
জগতে কোন বস্তুরেই হানড্রেড পারসেন্ট ট্রাস্ট কোর্বার দরকার নাই
অথবা ট্রাস্ট শব্দটারে
ফের আইনস্টাইনের দিকেই আমরা ছুঁইড়া দিতে পারি
ওইটা দিয়া আমাদের কাজ নাই
কেউ কেউ রইছে এক জীবনে অরা পাহাড় বা পাহাড়ের বরফাচ্ছাদিত বন্যতা
দেখে নাই
আর বোতলের শীত শীত মেট্রোপলিটান
আর মোনালিসার শীতের জন্তুজানোয়ার
অরা উপত্যকায় জঙ্গলে মৃত মাছিদের বেহেশতে
ঘুমাইতেছে
অরা ফিরা আসতেছে
ফিরতেছে
কিন্তু চোখ ছাড়া কিছুই নিয়া ফিরতেছে না
ক্যাফেতে বইসা নিজেরে খালি কইরা কফির মগ হাতে নিয়া
মহিলা এইসব দেখতেছিলেন
শাঁখ
গোয়ালে গাভীটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চোয়াল নাড়ায়।
অবাধ্য বাছুর দুধভর্তি বাটে ঢুসি দিলে
স্নেহ উপচায়- নিচে অন্নপূর্ণ পিঁপড়ের সারি।
তিনশো বছর পর গত রাতে চাঁদ কেঁদেছিল
তার ডানা কাঁঠালের পাতায় নোয়ানো;
ঈশান আকাশে সবুজ কুঠুরি
স্মৃতি ও মাধবিলতা।
বৈষ্ণব কুটুম্ব – পাহাড়ের সুঁড়িপথে
বাঁকানো ঝরণা ও ইহজাগতিকতা পবিত্রতা মনে করো,
শঙ্খিনীর নৃত্যে মোহ।
নদীর এপারে ডিঙি বাঁধা
সে পোহায় রংধনুর আঁচ;
গোয়ালে বাঁশের খুটি রৌপ্যে অপরূপ
নিশানা পড়ছে
আচমকা উত্তরের মস্নেক্ষেত বরাবর।
মারাঠা মুনমুন আগরবাতি
আঙুলে চ্যাটপেটে ক্ষুদ্ধতা কিন্তু মুঠোয় আসছে না
তত্ত্বমহব্বত যা উঠে আসে আঁচড়ায়
তা দিয়ে কুন্ড জ্বালিয়েও পোড়ানো যায় না ডোমের বাচ্চাদের
ষোল ফোঁটা ঘাম ফেলে শত হাজার চেষ্টাচরিত্তি করেও
ভেষজ অর্থনীতি বাঙালদের মুখে রোচানো গেল না
এদিকে তো ফ্রিজভর্তি টাটকা রসায়ন
সব্বাই মিলে মদ্দিখানটা যথাসম্ভব অন্ধকার বানিয়ে
তার শীর্ষে মারাঠা মুনমুন আগরবাতি
ইহকাল পরকাল প্ররোচনায় কট কট কটাস
এক ফাঁকে ছোট বউ পেটে খানিকটা রসায়ন ঢেলে আসে
ভাতার শুয়োরের পো এলেই
যাতে অসংকোচে চোখ লাল করে সামনে দাঁড়ানো যায়
ছুচো ইঁদুরেরা বাড়ির হর্তাকর্তা – চিঁ চি
মেচি ইঁদুরের সার্থকতা জীবনপন ওদের অনুকরণে – চিঁ চি
দেশ-টেশ ঘেন্না
শালা বড়লোকদের টয়লেট এর চেয়ে চকচকে আর অস্তিত্ববাদী
ইনফ্যাক্ট অন্যরকম ইম্প্রেশন কাজ করে
সদর রাস্তায় প্যান্টের জিপার খুলে উত্তুরে হাওয়ায় সটান দাঁড়িয়ে মোতো
শান্তি আছে
ডান হাতে ছেনি-হাতুড়ি বাম হাতে পিস্তল শামীম শিকদার
শোনো, মার্কিন ফাস্ট লেডি ইউনুসের বন্ধু
আর রমজানের পিয়েজে বেশ ঝাঁজ
খুব দ্রুত চ্যানেল চেঞ্জ হচ্ছে, ফিনিশিংয়ে ম্যাডোনা যদি ফোটে
তবে ও হাড়চিটচিটে বেশ্যা এক রাতের জন্যি মাফ
তারপর তুমিও একটা আর্তনাদ শুনতে পাও
ধুলোয় মাখামাখি এক থোক রক্তপিকাসো
আদিবাসি ঝড়
এক মুঠো তুষ
ছ্যাদলা বুঝে ছড়িয়ে পড়বে যদিও ঐ লাল গমক্ষেতে শংকা
মারাঠা মুনমুন আগরবাতি
শিশির আজম– কবি। জন্ম : ২৭ আক্টোবর, ১৯৭৮, ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : ছাই, দেয়ালে লেখা কবিতা, রাস্তার জোনাকি, ইবলিস, চুপ, মারাঠা মুনমুন আগরবাতি, মাতাহারি,টি পোয়েট্রি, সরকারি কবিতা, হংকঙের মেয়েরা।