খড়ের খরোষ্ঠী
বৃত্ত-বিভ্রমের এই পালাপর্ব শেষে যেতে চাওয়া ধান শুকোনোর
রোদে একবার বেহালা কাঁপানো আকাশ দেখাও তবে।করতলে
ক্লান্তির গান পাহারায় থাকুক।পরাজিত জুঁইয়ের হাসি কাঁপুক
প্রাণের ঐশ্বর্যে।হোক তবে শেষবার দেখা তোমার স্পর্শ যেমন
একেঁ রাখে গ্রীষ্ম তার উদাত্ত দুপুর।
কালপর্বে এমন আলোকবিম্ব দেখাও কারে!অনাহুত মন্ত্রণা পাঠে
স্বস্তি যাদের;পাঁজর তাকেও শুনিয়েছে ঐ ছায়াঘরের মায়াবী
কেতাব।জঠরে মুগ্ধতা রেখে সবশেষ শূন্যতায় ফেরাও এই
ঘোরের উদ্যান।শুকনো খড়ের হলুদলিপি লিখেছে তার শেষ
সন্তাপ।
কোথাও নয়। শিরস্ত্রাণে ধূসর পালাবদলের দিন ছেপেছে কোরাস নৈরাশ্যের।
আরতিপুরান
বুকের জমিনে থাকে না রূপকথা গল্পের মেঘ-আরতি।
কোনোদিন যে ফেরে নাই নির্জন বন্দরে বালিধোয়া জল-হে
কুয়াশার অতলান্ত ভিড়ের সৌকর্য থেকে দূরতম দূরে দেখেছি তাকে
অচেনা চড়ুইয়ের ক্লান্ত প্রশ্বাসে;
বন্ধ চোখে মৃতপ্রায় সন্ধ্যার মতোন উড়ালিয়া দিন ভালোবেসে
যে মরে গেছে কাফনের ওমে।
হঠাৎ প্রজাপতি রেখায় ভাঙে
জীবাশ্মের মতোন ঝুরঝুরে মাটির সংসার।
একাই গিয়েছি চলে
নিয়ে যাচ্ছি বুক পকেটে জোনাকীর লাশ।
এই উদ্বাস্তু পায়ে একা বাতাসে উড়িয়ে হুল্লোর
রোদের কামুক ছবি দেখে চোখের মলাট।
পাঁজরে লুকিয়ে পরম আলো
অগোছালো অন্ধকারে হাতড়ে নিজস্ব মুখ
কবে যে কোথায় রেখেছি শস্যের সবুজ!
সব গান মৃত্যুর মতো
পৃথিবীর সব রোদ জ্যোৎস্নার মতো একা ।
অপাঠ্য অনন্ত
জন্মাতে দাও। ধানগন্ধী রোদ্দুর চুলের সিঁথিতে এঁকে ফেলা ভুলে
ঘোলাটে জরায়ু ছিঁড়ে আকাশগঙ্গায় ।
ছেড়ে যাচ্ছো আলতা-পথের ছোপ ছোপ ছায়াটে মাদুরে হাতের আয়ুরেখা!
জলবিন্দুতে নারীশস্যের সিনান শেষে
ভালো থাকা ভাবতে ভাবতে কতকাল ভালো থাকেনি খুচরো সন্ত্রাসের বাঁক
মৃত মাছেদের কাতারে শুয়ে শুয়ে মরে গেছে ভোরের সুবর্ণতা
নিজস্ব নিয়মে আয়ুরেখা উধাও।
নাৎসি বাতাসে–
এরকম কোন কিছু প্রজাপতির ডানার মতোন
এরকম কোন কিছু নীল অশ্বারোহীর মতোন
প্রিয়হীন অপ্রিয় রেখাগুচ্ছ জুড়ে
লেপ্টে থাকা ধানের মগ্নতায়
নির্বিকার মুছে দিয়ে মগজের কারুরেখা
ছায়ায় হতে চাওয়া মাতৃজন্মদেহের আলো… অন্তর্লীন