সূর্য
জেগে উঠে দেখি
সূর্য ডুবে গেছে বড় দিঘিটির পাড়ে।
এই তৃষ্ণার্ত চোখ কোথায় লুকায়!
আল্পসের মঁ ব্লঁ অথবা কারাকোরাম
বন্ধু তোরা-আরালে নিবি;
লুকিয়ে?
ডুববি-ই যদি ডাকলি কেন
দশ আঙুলে জাকুজ্জি অব ডিসেপেয়ার
রহস্যঘন রহস্যরসের ওপার থেকে!
যখন আবার উদিত হবি, সীমানার চরাচরে
তখন আবিষ্কারে নেশা হবে, নতুন একটা
গহীন গুহা, সুখ ছড়ানো, চোখ ধাঁধানো
মেলিসসানি অথবা ফিঙ্গেলসে, তলিয়ে নয়
ঠিক ঘুমিয়ে যাবো, দেখিস একটা
দীর্ঘ আয়ু পেয়েই যাবো…
মৃত্যু সংবাদ
সংবাদ লিখতে গিয়ে যারা
নিজেই সংবাদ হয়ে যায়
তাদের নামে কি নিষ্প্রাণ পৃষ্ঠা কাঁদে?
আউশের ধানের গন্ধে ক্ষেত
মাতাল হয় না, পেটমোটা চাল
দীর্ঘ সময় পেট পূর্ণ রাখার বিদ্যা
মুখস্থের কৌশল শেখায় গরীব পেটকে;
কিছু প্রশংসা বীজে বীজে বয়ে চলে।
লাঙ্গল নীরবে গেঁথে রাখে স্বাদ,
আহ্লাদে কর্ষণ করে যোনি ও জীবন
নিগূঢ় মন্থন এবং জল ছুঁয়ে মাটি
উর্বর উর্বশী করে চলে যায় গেরস্থ:
পড়ে থাকে জীবনহীন বিন্দাস জীবনে
শুস্ক প্রিয় সেই মাটির সামান্য প্রলেপে।
এটা কী প্রেম নয়!
বীজে ফুল হবে,
ফলের গর্বে ভরে যাবে মাটির গর্ভ
ভুলে যাবে যে লাঙ্গল কর্ষণের প্রেমে
উর্বর করে কঠিনকে ভেঙে জীবন্ত
করে দিয়েছিল জননীর স্বাদ, সে হারাক
পালাক, অল্প প্রেম মানেই অল্প নয় কিন্তু;
সুদূর সূর্যও জানিয়ে দেয় আমি আছি
রাত শেষে আমার নামেই আমার মতোই
অন্য একটি সকাল দূর থেকেই আমার প্রেম
দেখবে।
কোন কোন মৃত্যু খবর মানেই শুধু মৃত্যু নয়
আবার একটা জন্মের নাম, এঁকে যাওয়া পদচিহ্ন
বা একটি ক্ষেত্রের উর্বর জন্মের প্রতিটি ফলের নাম।
প্রেম
একদিন করোনার করুণ সুর থামবে
তোমার বুকেও বকুলের সুঘ্রাণ হবে
ভুরভুর করে উড়বে প্রেম
লতায় পাতায় ফুটবে আহ্লাদ
তুমি জ্বলবে ফাগুনের জ্বালায়
সুদীর্ঘ নদীর ঢেউ এর মতো দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে
হেঁটে যাওয়া পথিকের সাথে মেলাবে নিজের শ্বাস;
জ্যোৎস্নার আলো অধরে একটা স্বপ্নের গল্প বুনে গেলে
তুমি ঘুম খুঁজবে তারাদের বুকে
যে সাগরে লবণ জন্মে তার একফোঁটা নোনা জলের আশায়
অযথা বাক্য ব্যয় করবে দিগন্তের সাথে
যেখানে ধূ ধূ প্রান্তর হারিয়ে যায়
শেষ হয়েও শেষ হয় না
ছুঁয়েও ছোঁয়া যায় না…
তিথি আফরোজ– কবি। জন্ম- ৬ অক্টোবর ১৯৮৭, নওগাঁ । বর্তমানে বাংলাদেশ বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিতে কর্মরত (ঢাকা কর্পোরেট অফিস) । প্রকাশিত কবিতার বই : ছন্দপতনের শব্দ, ওড়ার কৌশল, তিথির তিরিশ, দ্যা ব্লাইন্ড গড । সম্পাদনা- পুনশ্চ (যৌথ), ধূলিপথ।