মনফকিরা-১
আগুনে পুড়তে পুড়তে নাকি সোনা খাঁটি হয়, তোমার শহরে আসছে এক দাবানাল, সে আমি। জানি পেয়ে যাবো তোমার শহর, সেখানে নাকি জোছনা তোমার নিঃসঙ্গতায় পাথর হয়ে আছে, তোমার স্পর্শ ছাড়া তরল হবে না, ফিরে যাবে না চাঁদে, কি কাণ্ড বলো ! শহরের ঘাসগুলো হয়ে গেছে লোহা, তুমি নাকি হাঁটো না সড়কে, ঘরের জানালা বন্ধ । ভুলে গেছে পাখি বসন্ত সময়, শিশুরা মাঠে আর আসে না, দানব যানের কেবল কোলাহল, আর দোকানীরা বিক্রি করে মানুষের মাংস। পুকুরের গভীরে তোমার মুক্তির চাবি, বলছে আকাশগঙ্গা, ভালোবাসা এক আগুনের বাহন, আমাকে পৌঁছে দিবে ঠিক, তুমি অপেক্ষায় থেকো প্রিয়তমা, সব দেয়াল হয়ে যাবে পথ, আমি জানি।
তোমার কথাগুলো কত সহজে বলে যাও! আর আমি দম বন্ধ করে ধারণ করি, আমার আর বলা হয় না আমারও কত অসুখ, যাপনের যন্ত্রণা, লোহিত প্লাবনের দরিয়ার ফেনা, বিহঙ্গ ডানার ভিতর চৈত্রের দাহ, ভালোবাসার আগুনে আমি কত পোড়া ! লাস্যময়ী ঠোঁটের তরঙ্গে কেবল শেষ ট্রেনের হইসেল, কৃষ্ণপক্ষেস্বাদগন্ধহীন ঠোঁটের পরাগে ফুটেনি বাঁশফুলও, নিঃসঙ্গ লতা কম্পাস ধরে তোমার পথ করতে করতে চরাচরে ভ্রমণ, ব্রিজটা পার হলেই নাকি পালকের মখমল, অন্ধকারে ক্লোরোফিল- সূর্যের আলো পেলেই চালু হবে সবুজ কারখানা, এস্রাজে সুর দাও, কানে শুনি কলস্বরে করতালি। আমাকে সহজ করো, তোমাকে ধারণ করি ভালোবাসার মহাশুন্যতায়…
এই যে শব্দেরা তীখন হয়ে আকাশ ছুঁল ভাবি,আসলে আমার বাক-পাণি-উপস্থ ওই দূর ‘খ’ এর বহুক্ষণৃ.সে তো আমার কান ছুঁল কেবল,কিম্বা ভেতরে পদ্ম তারো ভেতরে প্রাণ,অথবা তুলসীহীন শপথের তাম্রকুণ্ডলিনী।
আমার বাক-পাণি-পাদপ সেই নিঃসীমপুরের গাছ,যার কোল-মাটিতে পা রাখলে শিরা দপদপিয়ে ওঠে,গাছটার। হাওয়ায় আবডালে আঙুল রাখলেই খাম খুলে যেতে পারে এতোলবেতোল,সাদা খামের একেকটি নিশ্চয় শব্দ থাকে।খোলার আগে অবধি অবশ্য পাঁচকুঁড়ি সম্পর্কিয়ানা,কিন্তু খুললেইৃ..স্রেফ এক। ভয়ে আঙুল গুটিয়ে আনি, পরপর শব্দের রাহাজানিতে যদি খুন হয়ে যাই অর্ধনিশ্বাস…