শীত ২০১৯
দিনগুলো অ্যাজমাটিক… নিঃশ্বাসের টানাপোড়েন। আমাদের নাগরিক জনপদে শীত আসে দূরবর্তী মফস্বল থেকে উলাক্রান্ত জানালায়। শীত এলো আমাদের শহরে, শীতের গল্প নিয়ে….
আমাদের ক্যালেন্ডার শীত রঙের দাগে ভরে যাচ্ছে, হিমফুল চোখে প্রতিদিন দেখি। রঙিন শিশির বিন্দু বিন্দু মুগ্ধতায় নির্বাক বায়োস্কোপে ছবি হয়ে ফোটে। অমিলিত বিচ্ছেদে তুমি শেষমেষ দূরত্বপ্রবাল।
পায়ের ছাপ হারিয়ে যেতে যেতে হলুদাক্রান্ত দুপুরগুলো বাজেয়াপ্ত। শৈত্যপ্রবাহ শেখায় দুই অক্ষরের মাঝে বিচ্যুতির ব্যবধান। বার বছর আগের একটা শীতার্ত প্রেম কম ভোল্টেজের আলো নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বুকের ব্যালকনিতে, প্রায়ই। খুব উসখুস ৷ একা একা এক কাপ লাল চায়ে ঊষ্ণতার ঘ্রাণ এবং কতিপয় দৃশ্যের বিষণ্ন জলরঙ,
অথচ আমার কিছুই জানা হয়না…
শুধু শুধু সারাটা শীতঘুম জুড়ে সুনীতি হাইস্কুল
পুকুর ঘাটে সবুজ পাড়ের শাড়ি পুড়ে যায়, যাচ্ছেতাই….
শহরের শীতকালীন উৎসব
আজকের আবহাওয়ায় কোন শোক নেই।
জাহাজ ভিড়েছে
নাবিকের সমুদ্র ভেজা নিঃশ্বাস ঢুকে পড়ছে… শহরে, অলিতে গলিতে।
নিশুতি যাপন… খুব অগোচরে,
যেমন করে পড়ে থাকে ঘুমের ভেতর বহুকাল আগের আধুলি স্বপ্ন।
কবরের নৈঃশব্দ্যে সন্ধ্যা নামছে৷ গ্রিলে ঝুলছে তরুণী বউদের রাত্রিকালীন পোশাক।
এখানে আমার কোন উপাসনালয় নেই।
মাঝেমধ্যেই রানিপুরম ধরে ধরে একটা সুড়ঙ্গ পথে যেতে সাধ হয়
যে পাহাড়ের নিচে রেখে এসেছি সোনারঙ দুপুর,
রাতের ডুব, কিছু ভেজা আঙুল ।
আমি বাড়ি ফিরে এসেছি… অগোচরে
দূরে… দূরে সরে যাচ্ছে বন্দর
ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে গুটিয়ে থাকা পথের রঙ।
আবছায়ায় বসবাস
২০ বছর আগের একটা মফস্বল সন্ধ্যা হারিকেন আলো নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে আমার ব্যালকনিতে, প্রায়শ।
আমার খুব উসখুস ৷ আমার একা একা এক মগ কফি দহন ঘ্রাণ এবং কতিপয় দৃশ্যের অধিস্বপ্ন ৷
শীতের বৈকল্য ঘোর জেঁকে বসলে আজকাল আমার অনেক কিছু জানতে ইচ্ছা করে,
চোখের সামন থেকে সন্ধ্যাটা সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কেউ ।
সন্ধ্যাটা কেউ গুটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নাটাইয়ে সুতোর মতন করে।
আমি বিষাদে মুখ ঘুরিয়ে নিই, আয়নায় চুরি যাই
দূরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা
ওখানে বহুকাল আগে ঘুড়ি ওড়া সন্ধ্যাগুলোর নির্বাসন…
শৌনক দত্ত-কবি