এক
ধরো, শকুন খাচ্ছে না মানুষের শব।
বাঘ পাহারা দিচ্ছে হরিণার শাবক।
অনন্ত আকাশের ক্ষুদ্র এক উপ-বালুচর
চৈতালি চতুর্দশী রাতে সেও পরে আছে
জোছনারোধক মাস্ক।
এমনসব রাতে বা দিনে যদি দেখো
ক্ষুদার্ত মানুষকে চিবুচ্ছে গলাঅবধি ভরে থাকা
কোনো না কোনো মানুষের চোয়াল
কার কাছ থেকে পালাবা
করোনা না মনুষ্যখাদক?
দু
চার কোণায় চার বাঁশ কুপে
দুই পাশের মাথা বরাবর
কিঞ্চিৎ লম্বা আর তারও চেয়ে
সরু দুটা বাঁশ ঝুলিয়ে দিয়ে
তার ওপর শনের দুটা চালা আড়াআাড়ি ভাবে
খাড়া করিয়ে দিলে তৈরি হয় যে শয়ন-স্বর্গ
আমার কবিতাও তাই।
ইট-পাথর-মার্বেল-গ্রানাইট সজ্জিত প্রাসাদতুল্য
কারুকার্যে পাবেন না আমাকে।
আমার কবিতা
বছর বছর ছাউনি দেয়া আদি-বাংলার প্রান্তিক
শনের ঘর
হাওরের বাতাস চরের বাতাস
এ বেড়া দিয়ে ঢুকে ও বেড়া দিয়ে বেরিয়ে যায়
আমি তার মায়া ও বিভ্রম নিয়ে জগতমুখী হয়ে
শুয়ে থাকি, থাকছি…
তিন.
ছন্দহীন চাতুর্যহীন
কলা ও কৌশলহীন
চৈত্রের সামান্য নদীতলা আমি
বুকে আমার ক্ষীণ আয়ু নিয়ে জন্মায় যেসব
কচি কচি ঘাসের সবুজ মায়াবী মাদুর
ওরাই আমার কবিতা।
বোশেখের আগাম জলে যখন তলিয়ে যায় ওরা
ধীরে ধীরে পচে যায় যখন ওদের চৈতালি লাবণ্য
খুচরা খাচরা ছোট ছোট মাছেরা ওদের
চুকচুক করে খায় আর পোক্ত হয়।
এইসব পোক্তাকে খেয়ে খেয়ে হৃষ্টপুষ্ট হয় মানবসন্তান।
কবিতা আসলে এভাবেই বেঁচে থাকে, হে ঈর্ষাইবলিশ।