ফাল্গুন
হলুদ আঁচল শরীরে ওমে —
ও প্রিয় ফাল্গুন: ঢেকেছি বসন্ত,
যে গেছো চলে—
বাগিচার পথে পথে ধূলির রেখায়
রেখে যাওয়া শিউলি, বকুল সুরভি সুর তোলে
নদীকূলে ফেঁপে উঠে ঢেউ…
ফাগুন এসে গেছে, এসে গেছে ফাগুন আবার
ওরে তোরা কে আছিস, দেখে যা দেখে যা
আঁচলে হাসনাহেনা, জুঁই, চাঁপায় লেগেছে আগুন!
ফুলের কাঁথা ফুলের বিছানায় এসো সুগন্ধি
গন্ধমের তলে: ফুলের মালা গেঁথে পরাবো
যে আছে আমার প্রাণের কাছে;
নদীর মতন ফাগুণবতী আর কে বলো আছে!
চলে আয় চলে আয় গঙ্গা যমুনার তটে
মাখবো গায়ে বসন্তরেণু ছুটে আয় ছুটে আয়
ও সখি ফাগুনবেলা আগুনে চলে যায়…
সুখ ও স্বপ্নের সাম্পান
ইতিহাসের বুকে দাঁড়িয়ে এঁকে যাবো ইতিহাস
ওগো দরদি যমুনা প্রশস্ত করো বুক
উৎফুল্ল জলে ডুবিয়ে তোল স্নিগ্ধ বাতাস
বয়ে যাক এই লোকালয়ে সুখ ও স্বপ্নের সাম্পান।
এই করোনার করুণধ্বনি বাজে না যেন কারো মনে
অতলের গরল তলে সমাধি তাবিজ করে চলে যাওয়া
জীবন তরী চলে না;
ভূতলে বিঁধে রেখে বুক ওড়ে না চড়ুই, টিয়া
উন্মাদ সকল জাগো জাগো, তরবারি তসবির তালে
একটি নতুন মন্ত্রে অজ্ঞাত দাওয়াই স্ফুরিত করুক
উজ্জীবিত মূর্চ্ছনা
ও উন্মাদ, ও ইবনে সিনা দেখাও শ্রেষ্ঠ করতল!
বড়ির তাবিজ
একবার প্রেমিকের বদলে ঘুমের ঔষধকে চুম্বনের গান শুনিয়েছিলাম
ঔষধটি মিহি সুরে পিয়ানো বাজায় আর আমি হিম হিম
হাওয়ায় ঢলে পড়ি তার কোলে;
যৌবনের প্রথম উন্মাদনায় আঁকড়ে ধরেছিলো সে
আমার স্পর্শকাতর স্নায়ু।
তার নামটা যেন কী ছিলো!
নাম-ভোলা স্বভাবে তাকে বেমালুম ভুলে গেছি
এতটা ভুলতে পারি ভেবে ফাগুনের ফুল ঝরা
প্রকৃতির মতো প্রফুল্ল লাগে
আর মাঝে মাঝে চিনচিনে ব্যথা।
কবিরাজদের কর গুনি; কারণে অকারণে
করোনার করুণ দিনে নাম লিখে রাখি প্রিয় সেবিকার;
আর যারা না ভোলার দাওয়াই খেয়ে মস্তিষ্কে সিলমোহর
এঁকে ছুমন্তর ছুঁ দিয়ে লিখে দেয় প্রিয় ঘুমের বড়ির নাম।
এই পলাশ ফুলের মৌসুমে একটা শিমুলের বনে
ভালোবেসে লিখে রাখো তোমরাও তাদের নাম।
উড়ুক প্রিয় প্রেম, বুকে রাখবো বড়ির তাবিজ
ঝরুক পত্পত্ পুরাতন পাতা, ফুটবে শিমুল
ভুলেরা ভুলুক, মনে রাখি কী দায়ে!
মোহনীয় সেবক-সেবিকাদের নাম
লিখে রাখি বুক পকেটে।
তিথি আফরোজ কবি। জন্মঃ ৬ অক্টোবর ১৯৮৭, নওগাঁ । বর্তমানে বাংলাদেশ বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিতে কর্মরত( ঢাকা কর্পোরেট অফিস)
প্রকাশিত কবিতার বইঃ ছন্দপতনের শব্দ, ওড়ার কৌশল, তিথির তিরিশ, দ্যা ব্লাইন্ড গড। সম্পাদনাঃ পুনশ্চ (যৌথ), ধূলিপথ।