হাসির অর্কেস্ট্রা
খুব দুখি যদি তুমি হও আমার বন্ধু হয়ে যাবে
পৃথিবী থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছ নিজের গুহায়
দিনের পর রাত, রাতের পর দিন মুখ-গুজে কাটিয়ে দিচ্ছ, একা
তুমি আমার বন্ধু হয়ে যাবে
পেয়ারার গন্ধে যদি তুমি অশ্রুপাত করে করে মনে করতে চাও
শেষ কবে তুমি আনন্দে আপ্লুত হয়ে হেসেছিলে, অথচ
ঠাহর করতে পারছ না, বরং তোমার মনে হচ্ছে,
হাসতেই হবে বলে কে আমাকে দিব্যি দিল?!
তবে আমিও তোমার বন্ধু হয়ে গেলাম
আত্ম-পাহাড়ের গোপনতর গোহার অধিবাসী!
চলো আমরা বন্ধু হই, দুঃখ ভাগাভাগি করি
একটু আপ্লুত হই আর হাসি
হাসার চেষ্টা করি
সামান্য দুষ্টামী
আমি যখন আমার রুমে লেখার টেবিলে সিগারেট জ্বালাই
দেখি সেটা দুই টানেই শেষ।
আমি তখন বিস্ময়ে মেনে নিলাম,
আমার সঙ্গে আর কেউ বোধ হয় ঠোঁট লাগায়
আর সে শয়তান ছাড়া কে হবেন?
আশ্চর্য হলাম, সিগারেট শয়তানের এতো প্রিয়!
এরপর ভেবে রাখলাম, এবার থেকে আমিই বেশি টানব
(শত হলেও সিগারেটটা তো আমার টাকায় কেনা)
কিন্তু সূক্ষ্ণ এই চালাকি দেখলাম কিছুতেই কাজে লাগছে না
তখন বললাম, ‘এসো আমরা সমজতায় আসি, সাম্য রক্ষা করি।’
তথাপি লক্ষ করলাম, আমাদের নারীবাদিদের মতো বিষয়টা
কেবলই ঠুটো হয়ে থাকল
এখন আমার উচিৎ, লেখার টেবিলে সিগারেট জ্বালানো থেকে বিরত থাকা
অথচ গ্রিকনিয়তী তাড়িত ট্রাজিক নায়কের মতো আমি ক্রমাগত সিগারেট জ্বালাই আর
আমারই আঙুলের ফাঁকে তা পরিণত হয় অন্য কারো খাবারে,
ঠিক প্রভাসী ভাইবোনদের সেমিটেন্সের মতো
ফলে হয় কি, শয়তানের টানা সিগারেটের ছাইয়ে আমার শব্দ অস্পষ্ট হয়ে যায়
বেটিবল নোংড়া হয়
আর স্বয়ং আমার মুখ, আমিই যাই মুছে
উত্তরাধুনিক প্রেম
দেহ চাও দেহ পাবে, চাই-কি একটু মনও দিতে পারি,
বিকেলের পর বিকেল বাদামে সঙ্গ দিতে বলো?
সব পারব।
পারব মাথায় বিলি কাটতে, বিস্রস্ত কলার ঠিক করে দিতে
রাতের পর রাত ফোনালাপে কোনো সমস্যা নেই
একদিন রান্না করে নুডুল্স নিয়ে আসতে বলো?
পারব।
বাবার পটেক মেরে দুশো-পাঁচশ সরিয়ে তোমার হাতে তুলে দিতে?
তাও পারব।
তবে এর চেয়ে বেশি চেয়ো না, দিতে পারব না
মন?
সেটা আতর মাখিয়ে র্যাপিং পেপারে প্যাকেটিং করে ব্রিফকেসে তুলে রেখেছি।
ওটা দেব দলিল-দস্তাবেজসহ।
ওটা পাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা অমন কেউ
–যার ঘরে আমি বউ হব।
ও তুমি চেয়ো না গো, পাবে না, শুধু শুধু কষ্ট পাবে।
বরং শেষ চুম্বনটা নিয়ে যাও, আগমী বুধবার ১২ ডিসেম্বর;
বার-বার-বার, তারিখটা সুন্দর না! আমার বিয়ে। এসো।