অফিস থেকে বের হয়ে সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে লাইনে দাঁড়াতে একেবারেই ইচ্ছা করছিল না আতিকের। কিন্তু উপায় নেই। বাসা থেকে বের হবার আগে বউ বার বার বলে দিয়েছে — “আজ খালি হাতে আসলে, পানি না আনলে ছেলেটাকে বাচাঁনো দায় হবে।” দুই বছরের ছেলেটার কচি মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সকল অনিচ্ছাকে ইচ্ছা শক্তি দিয়ে জয় করে হেঁটে চলে সরকার অনুমোদিত পানির দোকানের দিকে। দোকানের সামনে এসে মাথায় বাঁজ পরে আতিকের। যে বড় লাইন, তা ঠেলে আজও পানি নেয়া সম্ভব কিনা জানে না আতিক। গত মাস থেকে আবার নতুন নিয়ম চালু হয়েছে, সকাল নয়টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্য পানি দেয়া বন্ধ। খুব বেশী চিন্তা না করে নিজেকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে লাইনে দাঁড়ায় সে। লাইনে আসার পর থেকে মাথার বা পাশটা টিপ টিপ করে ব্যাথা করতে শুরু করেছে। ব্যাথার তিব্রতা মাথায় উল্টা পাল্টা চিন্তা টেনে আনছে। এইতো এক্ষনি সামনের লাইনে দাঁড়ানো মানুষগুলোকে পানির স্রোত মনে হচ্ছিল। এই পানির স্রোতে ভেসে যাচ্ছে সে। যেখানে তীর সেখানে দাঁড়িয়ে আছে তার দাদা। দ্রুত সামনে যাবার জন্য চিৎকার করে যাচ্ছে বিরাতহীন। তার দাদার মুখেই গল্প শুনেছে, এক সময় এই দেশের বুক চিড়ে বয়ে চলত পানির স্রোত। এই বয়ে চলা স্রোতের নাম ছিল নদী। এই দেশে অনেক নদী ছিল বলে এক বলা হত নদী—মাতৃক দেশ। নদীর বুক চিড়ে বয়ে চলত এক ধরনের বাহন যার নাম নৌকা। আরও কত পানির ব্যবস্থা ছিল। হাওড়, বাওড়, খাল, বিল। হাওড় অঞ্চলে যে দিকে চোখ যেত শুধু পানি আর পানি। সে বহুকাল আগের কথা। তার দাদাও নাকি শুনেছেন তারও দাদার কাছে। তখন নাকি পানি কিনতে হত না। কল নামের একপ্রকার ধাতব যন্ত্র ছিল যার হাতল চাপলেই সুমিষ্ট খাবার পানি ঝড়ত।
পেছনের জনের উতপ্ত গলার স্বরে লাইনে ফিরে আতিক।
— এই যে শুনছেন, সামনের দিকে যাচ্ছেন না কেন? আপনি না গেলে আমাদের ছেড়ে দিন।
সামনে তাকায় আতিক। লাইন অনেক সামনে চলে গেছে। আবারও মানুষের চলমান স্রোতে গাঁ ভাসিয়ে দেয় সে। মাথার যন্ত্রনাটা আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। নিজেকে এখন এই দলের একজন মনে হচ্ছে। কত পেশার মানুষ। এখাসে কোন ভেদাভেদ নেই। নেই কোন অনিয়ম। এখানে ধর্মও একটা, অহিংসা। সবার দাবীও একটা। একটু পানি চাই। বেচেঁ থাকার জন্য কেবল একটু পানি। অথছ একটা সময় নাকি পানির তোড়ে ভেষে যেত গ্রামের পা গ্রাম। নদী তীরের মানুষ গৃহহারা হয়ে দলে দলে পাড়ি জমিয়েছিল শহরের দিকে। আতিকের প্রশ্ন এত পানি কই হরালো। দাদা বলতেন—
— বুঝলিরে দাদাভাই এই পানি একদিনে নষ্ট হয়নি। দিনে দিনে আমরাই নষ্ট করেছি সব।এই মাটিতে সোনা ফলত। যার নাম ধান। পাকলে সোনার রঙই ধরত। বাতাসে দোলত সোনা রঙের ধান। বেশী ফলনের আশায় বিদেশীদের কথা মেনে মাটিতে মিশিয়েছি সার। পোকা থেকে বাচঁবার জন্য কিটনাশক। সেই বিষ বৃষ্টির পানিতে ভেষে মিশেছে নদী, নালা, খাল, বিল সবখানে। নিজের বীজ ছেড়ে নিয়েছি হাইব্রিড, ইরি আরও কত বীজ।পাম্প দিয়ে পানি উঠিয়ে কমিয়েছি পানির স্তর। মাটির গভীর থেকে পানি তোলাতে আর্সেনিকের স্তর উপরে উঠেছে দিনে দিনে। আর যত কলকারখানার বর্জ্য সব ঢেলেছি নদীতে। টলমলে পানি কালো হয়ে গেল দিনে দিনে।
মানুষ নিজের ক্ষতি জেনে কেন এই রকম বোকামী করে, আতিকের মাথায় ধরে না এই কথা। আবার পেছনের ডাক—
— কি ব্যাপার ভাই? আপনার না হয় পানি লাগবে না। তা বলে সবাইকে নিজের দলের ভাবেন কেন? লাইনের সাথে চলুন, না গেলে রাস্তায় উঠে যান। খামোকা ঝামেলা তৈরি করছেন কেন?
এবার সাথে যোগ দেয়ে লাইনের আরও অনেকে—
— দাদার মনে হয় সরকারী আত্নীয় আছে। পানি এসে হাতে তোলে দিবে।
— আরে না। কি ভাই টাকা চালান করে দিয়েছেন নাকি? তা প্রতি প্যাকেটে কত বেশী দিতে হয়েছে।
তৃতীয় লোকের কথায় ভাবনাটা মাথায় ঝিলিক দিয়ে যায়। ভাবনাটা আরও আগে কেন আসেনি, এই জন্য নিজেকে গাল দেয় আতিক। যদিও আগে শুনেছে, এখানে অনেক দালাল আছে। প্যাকেট প্রতি দশটাকা বেশী দিলেই আর লাইনে দাড়ঁতে হয় না। তারাই সব ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু কোথায় পাবে তাদের। ভাবতে ভাবতে কখন যে লাইনের বাহিরে চলে আসছে আতিক, নিজেও টের পায়নি। তৃতীয় ব্যাক্তি আবার চেচাঁয়—
— কি দাদা চলে আসছে নাকি?
লোকটার কথায় টিটকারীর সুর স্পষ্ট। কারও কথায় আর কানে যাচ্ছে না আতিকের। চার দিকে তাকায় সন্ধ্যানী চোখে। তার এক জন দালাল লাগবে। না কোন দেহ ব্যবসাহীর দালাল। না একজন পানির দালাল। তার কানে দুই বছরের শিশুর তৃষ্ণার্ত গলা ভেষে বেরাচ্ছে— মা একটু পানি খাব। আর তাকে বাচাঁতে আতিক সব করতে পারে সব। বিনিময়ে তার অল্প পানি দরকার।
কাঁধে কারোর শক্ত স্পর্শে চমকায় আতিক। পেছনে তকাতে ভয় হয়। তার দাদা নাতো। মনের ভাবনা পরে তাকে শাষাতে এসেছে। চিন্তাটাকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে পেছনে তাকায় সে। একজন অপরিচিত লোক দাড়িয়ে আছে। আতিক খুজঁতে শুরু করে। না কোথাও দেখেনি এই মানুষটাকে। না ফেইসবুকে। না গুগুল প্লাসএ, না ইয়াহু মেসেঞ্জার এ। লোকটির ভারী গলার আওয়াজ তার ভাবনায় চাবুক চালায়। ছিন্ন হয়ে যায় তার সকল নিরবতা।
— ভাইজান কি লাইন ছাইরা দিছেন। ভাল, আজকে আর এমনেও পানি পাইতেন না। পানি শেষ। আবার কাইল চালান আইব। তা ভাইজান পানি আজকেই লাগবো।
লোকটি একটি কার্ড সামনে বাড়িয়ে দেয়।
— এই নাম্বারে ফোন দিলেই আমারে পাইবেন। বাকী কথা না হয়ে ফোনেই অইব।
লোকটি যেন হাওয়াই মিলিয়ে যায়। সামনে তখন তমুল হট্টগোল। এটাও নতুন কোন ঘটনা না। প্রায়ই পানি শেষ অযুহাতে দোকান গুলো আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়। এর পরের ঘটনাও ছকে বাঁধা। কিছু সময়ের মাঝেই এই স্থান রণক্ষেত্রে পরিনত হবে। আসবে সরকারী বাহিনীগুলো। লাঠিচার্জ, কাঁদানো গ্যাস। এর পর জল কামান। যেখানে পানির জন্য এত হাহাকার, সেই খানে জল কামানগুলো নষ্ট করে গ্যালনের পর গ্যালন পানি। এইগুলোকে কেন আজও যাদুঘড়ে পাঠনো হচ্ছে না। এই আলোচনায় প্রায়শই উঠে আসে জনগণের মাঝে। এতেও কাজ না হলে গুলি ছোড়বে। পত্রিকাগুলো পাবে রসালো হেডলইন। ঘটনার ভয়াবহতা চিন্তা করে সময় থাকতে নিরাপদ দূরুত্বে পৌঁছানোর তারা অনুভব করে আতিক।
বুক পকেটে হাত দেয় আকিত। নিরাপদে আসার পর ঘটনাটাকে কেবলি কল্পনা মনে হচ্ছিল। না! কার্ডটা আছে। তার মানে ঘটনাটা সত্যই। ডায়াল করে কার্ডে ছাপা নাম্বারে। আকিতের মনটা ভাল হয়ে যায়। ওপর প্রান্তের ফোনে বৃষ্টি ঝড়িয়ে যাচ্ছে অবারিত। লোকটার রুচিবোধ ভেবে কেমন জানি একটা শ্রদ্ধাবোধ জাগে মনে। বৃষ্টি! কত কাল মন ভরে বৃষ্টিতে ভেজা হয় না। আতিকের বউ বৃষ্টি হলেই শিশুদের মত আচরণ করে। না গা ভেজাবার আনন্দে না। কিছু খাবার পানি ধরা যাবে সেই আনন্দে। কিছু দিনের খরচ বাচাঁনো যাবে সেই আনন্দে। যত কষ্ট তার মত সল্প আয়ের মানুষদের। যাদের পয়সা আছে তারা বৃষ্টি ধরে রাখার জন্য প্লান্ট করেছে। তাদের কোথাও যেতে হয় না পানির অভাবে পরে। মাঝে মাঝে ভাবে বৃষ্টি সংরক্ষন প্লান্টের দাম আরও কম হলে কি হতো। ভারী গলার শব্দে আবার ফিরে আতিক—
— কে? কাকে চাই?
— আমি আতিক। আপনি আমাকে নাম্বার দিয়েছিলেন। পানি…
— তা কয় প্যাকেট লাগবো? কয় গেলে আপনেরে পামু?
পানির দালালকে লাইনে রেখেই পকেট হাতরে নিজের সঙ্গতি সম্পর্কে ধারনা নিয়ে বলে
—দুই প্যাকেট। আমি আছি কতোয়াল ভাস্কর্যের সামনে।
— এটা আবার কোথায়?
— রমনা থানা টা চিনেন? ঠিক রমনা থানার সামনেই।
—রমনা থানা?
— আরে এটাও চিনলেন না! রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনটা আছে না…
— ধুরু ভাই… আপনের শইল খারাপ করছে বাসাত যান। আবোল তাবোল কইতাছেন।
অপরপ্রান্তে লাইন কাটার শব্দ হয়। এই প্রথম নিজের দাদার উপর বিরক্ত হয় আতিক। এই জায়গাগুলো নামও তার দাদার কাছথেকেই শুনেছিল সে। প্রথমবারের চেয়েও দ্বিগুন ভয় নিয়ে ফোন দেয় পানির দালালকে। অপর প্রান্তে আবার বৃষ্টির শব্দ। আতিক ভাবে, এবার আর কোন উল্টা পাল্টা কথা নয়। যে করেই হোক পানি নিতেই হবে।
নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ছেলের জন্য পানি নেয়া গেল। দাদার প্রতি বিরক্তিটুকুও নেই। বরং মনে করার চেষ্টা করে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনের নাম কি ছিল। পদ্মা না যমুনা। পদ্মা যদি রমনার সামনে হয় তবে যমুনা কই? আরও কি যেন ভাষ্কর্য ছিল। হ্যাঁ মনে পড়েছে, ময়ূরী। কি নাম ভাষ্করের? মৃনাল হক। আচ্ছা রূপসী বাংলার সামনের ভাষ্কর্যটার নাম কি ছিল? রূপসী বাংলার পূর্ব নাম কি ছিল? কিছুতেই মনে করতে পারেনা আতিক। চোখের সামনে ভেষে ওঠে দাদার বিরক্ত মুখ। আর অপরাধীর মত দাড়িয়ে আছে সে।
আরও কত আশ্চর্য কথাইনা বলত দাদা। আমাদের দেশ পানি সংকটে পরার জন্য শুধু আমরাই দায়ী না। দাদা বলতেন—
— বুঝলিরে আতিক,আমদের উজানে যে দেশ আছে না তারা নদীর উপর বাধঁ দিয়েছে। ওদের ইচ্ছা মত আমাদের পানি দেয়। তাই আমরা এই রকম শুকিয়ে মরছি। উজান দেশ প্রথম গঙ্গা নদীতে বাধঁ দিয়েছিল পানির বেগ কাজে লাগিয়ে বিদ্যুত উৎপন্ন করার জন্য। এর পর আরও কত নদীতে যে বাধঁ পরল। ফারাক্কা নিয়ে কত তোলপার হল। টিপাইমুখী বাধঁও কম আলোড়ন তোলেনি। তারা নাকি বলেছিল গঙ্গা—কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের জন্য কতটুকু পানি দরকার তা যেন আমরাই ঠিক করে দেই। উজান দেশ আরও কি যেন প্রকল্প হাতে নিয়েছিল, যার নাম নদী সংযোগ প্রকল্প। যার উদ্দেশ্য ছিল ভাটির পানি উজানে সরিয়ে নিয়ে আমাদের পানি শূণ্য করে ফেলার গোপন চক্রান্ত। বিদ্যুত উৎপাদনের নামে উজান দেশ আগেই ৪৮টি নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহে বাধঁ সেধেছে অথবা সরিয়ে দিয়েছে। এতে করে আমাদের দেশের নদীগুলো পানিশূণ্য হতে শুরু করে। ওরা আমাদের সাথে একটা চুক্তি করে, নাম দেয় পানি বন্ঠন চুক্তি। আর ওদের কথাই বলি কেন? আমাদের দেশেই বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধঁ নামে কমতো বাধঁ দেয় হয়নি।
আতিকের মাথায় ধরে না নদী যদি পানি বয়ে আনবে তবে আবার পানি বন্ঠনের জন্য চুক্তি লাগবে না কেন? মাঝে মাঝে আতিকের খুব ইচ্ছা করে এই বাধঁ গুলো খুজেঁ বের করে ধূলার সাথে মিশিয়ে দিতে। আমরা শুকিয়ে মরব, আর তোমরা বাধঁ দিয়ে নদীর পানি আটকে রাখবে। এ কেমন নিয়ম? নিজের অপারগতাকে মেনে নিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে সে তাকায় হাতে পানির প্যাকেটের দিকে। তার অসহায়ত্ব আরও বাড়ে, যখন সামনে চারজন দাড়ায় উমুক্ত অস্ত্র হাতে।
আতিক সেচ্ছায় তার সবকিছু ওদের হাতে তোলে দেয়। জানে প্রতিবাদ করে লাভ নেই। মানুষগুলোর চোখের হিংস্রতা আতিকের মনে ভয় তৈরি করে। আতিকের এগিয়ে দেয়া অর্থে দিকে ফিরেও তাকালো না চারজন। হাত বাড়ায় পানির প্যাকেটের দিকে। এবার আর নিজেকে ধরে রাখদে পারে না আতিক। চারজনকে উজান দেশের বাঁধ মনে হয় তার কাছে। ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে চায় বাঁধগুলোকে। কিন্তু কোন প্রতিরোধেই আতিক পানির প্যাকেট আটকাতে পারছে না। হাতাহাতির এক পর্যায়ে পানির প্যাকেট মাটিতে পরে যায়। ফেটে যাওয়া পারিন প্যাকেটে আতিককে দুঃসাহসী করে তোলে। ঝাপিয়ে পরে আক্রমনকারীদের উপর। ব্যাপারটা স্পষ্ট নয়, আতিকের আক্রমন থেকে বাচাঁর জন্য, নাকি আক্রমনের পাল্টা জবাব দিতে একজনের হাতের লেজার গান ঝলসে ওঠে। এর পর চারদিক অন্ধকার, নিরবতা। রাস্তায় লুটিয়ে পরে আতিক। রাস্তায় গড়িয়ে পরা পানির দিকে হাত বাড়ায় সে। এইতো উজান দেশের বাঁধে গাইতী চালাচ্ছে তার দাদা। সাথে হাজার হাজার মানুষ। প্রতি আঘতে নেমে আসছে পানির ধারা। হঠাত বাঁধ বিষ্ফোরিত হয়ে নেমে আসে পানির ঢল। পানির তোড়ে ভেষে যাচ্ছে সব। কিন্তু একি, তার খোকাও যে ভেষে যাচ্ছে। অস্থির হাত—পা ছোড়ে আতিক তার খোকাকে বাচাঁনোর জন্য। এইতো খোকার কাছে যেতে চাচ্ছে, স্রোত তাকে ততই দূরে ঠেলে দিচ্ছে। ছোখ বন্ধ করার আগে আতিক শুনে, রাতের নিরবতাকে চিরে একটি এম্বুল্যান্স এই দিকেই এগিয়ে আসছে…
ফয়েজ– সংস্কৃতিকর্মী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা।