মায়াচিঠি
হু হু কান্না তোলে, রাত ভোর ছোঁয় না;
ডুবে যায় ডাকের ডাকাতিয়া রবে। কুমেরু সুমেরু বোঝে না, শুধু
হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে যায় অন্ধের অন্ধত্বে।
এ আজন্ম রোগে বিলীন আত্মা
আকাশে পাতালে পবনে
মিলে না ঠাঁই। কাস্পিয়ান, ভূমধ্য
আর আরব সাগর যেখানেই ভাসায়
ডুবার বাহানায় সকল মুখস্থবিদ্যা
ভুলে ডুবে যাই সেই অন্ধের অন্ধ
কারাগারে। যেখানে আমৃত্যু শকুনের
বাস। বুকের বাম পাশ রক্তাক্ত করে
কচলিয়ে লবণে গুলিয়ে পান করে সে
জন্মান্ধ মদিরা।
ব্যাধিতে সুরেলা সুর মেশায় হেঁটে
হেঁটে হারায় হেয়ালি লানকারান
পাহাড়ের পাদদেশে। হলুদ পাতাদের
কোলে ময়াভরা বুলবুল বুকে নেয়
বাবুয়া গীতালি গেয়ে, সুখঘুম শরীর
মেশে দেয় ক্ষতে। মনোলোভা
চুমায়িত বদনে চেয়ে দেখি ফিরে
আসে হারানো কুহুতান পাতায়ার
শীতভোলা বসন্তে। সেই ব্যধি
কবেকার চিনচিনে বেদনায় কোন
রূপ মায়াময় হেসে হেসে নীল খামে
পাঠায় শুধু নিরালায়, পাঠায়
মায়াচিঠি চুমুচুমু জাগানোর
বাঁচানোর মন্ত্র মোহফুল এবেলায় ওবেলায়…
ঈশ্বর একটা জাদুকর
তোমরা কেউ জানো না
জানার কথাও না
এটা সম্ভব কোনো কিছুও না
কিন্তু তবুও আমি দেখেছি
আমার দেখার সৌভাগ্য হয়েছে
বলতে পারো এটা আজগুবি
অথবা অবাস্তব! কিন্তু শোনো,
কথাটা সত্যি…
বেশ আগের কথা,
আরব সাগরে যে রাতে ঝড় এসেছিলো
তার সকালেই একটা গনগনে সূর্য ছিলো
আর আমিও ছিলাম পরিব্রাজক
শূন্য পায়ে তপ্ত বালিয়াড়ি
হঠাৎ ফুটে উঠলো একটা শাপলা
সবুজ গালিচার মখমলে ঘাস জেগে উঠলো
পায়ের তলায়, শাপলা ক্রমশ তার হাত বাড়িয়ে
তুলে নিলো তার মুকুটে সমস্ত ইন্দ্রিয় আমার
আমি ঈশ্বরের বেহেশতে উঠে গেলাম
তাঁর কাঁধে ভর দিয়ে।
মূলতঃ ঈশ্বর সেদিন জাদুকর ছিলো
তিথি আফরোজ– কবি। জন্ম- ৬ অক্টোবর ১৯৮৭, নওগাঁ । প্রকাশিত কবিতার বই : ছন্দপতনের শব্দ, ওড়ার কৌশল, তিথির তিরিশ, দ্যা ব্লাইন্ড গড, ফেইস ইনসাইড দি মাস্ক । সম্পাদনা- পুনশ্চ (যৌথ), ধূলিপথ।