নিশাচর প্রাণি ও প্রেম
বৃষ্টির পুরাণ খুলে মুখস্ত করেছি আদিম জীবন।
ক্যাকটাসের ফুলে আমাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা, প্রিয় যৌবন।
আমরা বহুদিন নিশাচর, প্রহরীর বাঁশিতে পাহাড়া দিয়েছি শূন্য বাগান।
তালপাতায় লেখা গল্পের শহর, বটের বুকের পরগাছা; সহস্র বছর কিছুই বেঁচে থাকেনা।
মহেঞ্জোদারোর নিচে চাপা পড়ে আছে কতো প্রেম। তুমি কি একবারো আয়না ভেঙে হয়েছো সবুজ।
আঙুলের রেখায় সখ্যতা গড়েছো লাল কলমের কালিতে।
পালইয়ের স্তুপে ভরে যাওয়া উঠোন রাত নিভিয়ে সূর্যোদয় ডেকে আনে।
আমাদের প্রেম কবেই তো গিলে নিয়েছে মুনিয়ার ঠোঁট।
তবু বারংবার জন্মকে লিখে রাখি বাঁচার তাগিদে।
পড়শির লাউ গাছ ফণা তোলে ভোরের বিরুদ্ধে।
মেঘবিহীন দিনে বেড়ে ওঠে উন্মাদ ঘাসফড়িং।
জলপাহাড় পাখা উড়ায়
সময় ছুটতে ছুটতে একদিন থমকে দাঁড়াবে।
কংসের শরীরে হারানো ঘর খুঁজে পাবে মানুষ।
চরের সবুজে বাদামের গন্ধ নিয়ে দূর পথ পাড়ি দেবে জলযান।
তরমুজের খোলসে লেখা থাকবে মানুষের শ্রম।
সময়েরও অসুখ হয়। সভ্যতা ঘুরে দাঁড়ায়।
মাঝরাতে উড়ে যাওয়া মেঘ কানে কানে বলে যায়-
পাতাবাহার প্রাণিদের ভিড়ে নিজের অস্তিত্ব খুঁজতে যেওনা,
শ্যাওলায় ঢেকে যাবে চোখ; রাতের দীর্ঘশ্বাস।
শ্রাবণ পূর্ণিমায় খসে পড়ে চালতাফুল।
রাতের প্রহরী বাঁশিতে লুকায় অজস্র ব্যথা,
রমণীর জৌলুস। মুদ্রা ভাঙা বুকের ঘড়িতে রাত বাড়ে।
প্রিয় রাস্তাও একদিন আর মনে রাখবে না। জঙ ধরা বাঁশি ক্ষত আঁকবে।
ঘোড়ার পিঠে সোনালি ধান, আমাদের ভুলে যাওয়া দিন।
অঘ্রাণ মাঠের শীতলতা খোয়া গিয়েছিলো রঙিন সকালে।
আমার জন্মের বহু আগে পিতামহ গচ্ছিত রেখেছিলেন বুকের সবুজ।
কংসপুত্রের চোখ জানতো সময়ের অসুখ, বটবৃক্ষের ছায়া হারানোর গল্প।
জানতো ভাঁজহীন স্যুয়েটার কাঁপিয়ে শীত নামবে একদিন।
মানুষেরা ইতিহাস ভুলে যায়। তুমি-আমি আমাদের ভুলে যাই।
মুসলধারে বৃষ্টি এলে দেখি এক জীবন কোথায় উড়ে গেছে।
মনের অসুখ সেরে যায়। শূন্যতার প্রলেপ জমা রাখি।
বৃষ্টি ভর্তি আঁচল নিয়ে আমিও আর ফিরতে পারিনা।
প্রিয় খামে দুঃখ লিখো তুমি।
কংসকন্যা ভোর দেখে, নিঝুম ভোর। পাখির চোখে তুলে রাখা জলপাহাড়।
পাখি ও ফুলের গল্প
আ্যালামন্ডার ঝোপে শীত পোহায় একা পাখি
উদাস রক্তক্ষরণ জমা থাকে ঘাসের বনে।
পৃথিবীতে যখন সন্ধ্যা নেমে আসে আমি পাঁজর খুলে বসি,
দেখি কোন হাড় ক্ষয়ে গেছে; জঙ ধরেছে কোনটায়।
দেখি কোনটা জুড়ে দিতে হবে কোনটার সাথে।
শীত কাঁপানো রাতেও জমজমাট হয়ে ওঠে মশলার বাজার।
আ্যালামন্ডার ঝোপে শীত লুকায় একা পাখি।
যে পথ নদীর দিকে গেছে তা ভরাট হয়ে আছে অসংখ্য খোলসে,
কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ঋতুমতী মাটি।
খোল করতালে দাহ হয় নদীর বুক। আহা, আগুন উৎসব।
কালো ঘোড়ায় চেপে পাখিটা আকাশ ভ্রমণে যায়।
কালো ঘোড়ায় চেপে পাখিটা আ্যালামন্ডার ফুলে মুখোশ বানায়।
কালো ঘোড়ায় চেপে পাখিটা উড়তে ভুলে যায়।
আমি হাড়ের পর হাড়ে প্রলেপ দিতে থাকি, মশলার বাজার ভীষণ জমজমাট।