প্রার্থনা
এভাবে গলা চাপা খেতে খেতে
রুদ্ধ হয়ে এলে আমাদের সকলের কণ্ঠনালী
আপনাদের যাবতীয় গুণকীর্তন
নামজপ আর প্রিয় ভজন-গান
যদি না গেয়ে উঠতে পারি কোনদিন
যদি আপনাদের চরিতামৃত
অপাঠ্যই থেকে যায় আমরণ!
সেইসকল অপরাধ
নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন হে ভগবান!
পাখি
একবার এক কথা বলা পাখি
উড়ে এসে বসলো আমাদের আঙিনায়।
সে বলছিলো তার উড়ে আসা পথের বিবরণ;
পর্বত থেকে ঝর্ণা কেমন নদী হয়ে নামে জনপদে
কেমন করে বনাঞ্চলে প্রাণীরা করে জীবনাচরণ
কিভাবে কাঁটাতারের দুইপারে
মানুষেরা সন্তান ও ফসলের আবাদ করে
গড়ে তোলে গল্পের মতো ভবিষ্যত।
গান গেয়ে শিষ বাজিয়ে সে আরো বলছিলো
আকাশ কেমন স্বাধীন, কেমন আমোদ
যা খুশি বলতে পারার, কেমন শান্তি
মুক্ত বাতাসের ঝাপটায় আর
কতটা আনন্দ লাগে পরার্থপরতায়!
তার কথায় শিশুর মতো সরলতা ছিলো
উপলব্ধিতে সহজ জীবনের আদিম বয়ান।
তবুও তার কথা শুনে আমাদের ইচ্ছে করে বধির হয়ে যাই!
কেননা তার ভাষ্যে আমরা পরাধীন
তার গল্পে আমরা যেনবা রুদ্ধদ্বার কূপে আবদ্ধ!
কথা বলা পাখিটার আগমনের আগে
আমরা এই আঙিনায় শান্তিতে ছিলাম
দেয়ালের ভেতরে প্রগ্রেসের হিসাব কষছিলাম।
অথচ এই পাখি আমাদের শান্তি নষ্ট করছিলো
জীবনের অর্থহীন মানে শেখাচ্ছিলো!
আমরা তাই বৃহত্তর শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে
আমাদের দক্ষ শিকারী দলকে বিশেষ এসাইনমেন্ট দিতে বাধ্য হলাম।
শিকারী দলটি আমাদের মান রাখলো আরেকবার।
আরো একটি সাকসেসফুল অপারেশন করে
পাখিটাকে এক শব্দ-দৃশ্য বদ্ধ খাচায় বন্দি করলো।
আমরা আবার শান্তি-শৃঙ্খলে
যাবতীয় উন্নয়নের সূচকে
আমাদের বাহাবা কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম।
পাখিটার কথা আমাদের আর মনে পড়লো না।
যোবায়ের শাওন