নির্মিত বরাভয়
রেখে যাওয়া হয় না এই ঘুম। অনিঃশেষ মায়ার আয়োজন
ভুলে গেলে ফেরারি হয় যতোটুকু প্রজাপতি ডানা
পাহাড়ের গৌরব ছুঁয়ে তার থেকেও বড্ড অজানা
কেঁপে ওঠে উন্মুক্ত যৌবন। নারীর মতো, নদীর মতোন
দৃশ্যে ছিলে পালকের মতো একা । সে গান শুনতে চেয়েছি তোমার কাছে । ভোরের আকাশ, ভোরের শুদ্ধতা কাঁপিয়েছো।কররেখায় বেলীফুলের নাচ-ঝরা পাহাড়ী জলের ঘ্রাণ শুকেই এতোটা প্রহর কেটেছে । ঐ সব ভোরেই অপাঠ্য রয়েছে তোমার সাহস ।
পাপ কিংবা পূণ্যের হিসেব মেলাতে মেলাতে চলে যাইনি করুণ বুকের হাওয়ায়।
চেনা অচেনা কেউ নয় সত্যি। সবটুকু ফেরারি ভ্রমণের দাগে
তোমাদের কণ্ঠোচ্চারিত একেকটি নির্ঘুম গোলাপ প্রাত্যহিক।
পশরা ছেড়ে যাওয়া নিয়ে ভয় যতো। পরাভব জীবনের সিঁথি ছেড়ে যেতে বহুবার কলহ ভুলেছি। আড়ালে এমন কোনো নৈসর্গ নেই যে পথ দেখাবে হঠাৎ।
সবকটাতেই জড়তা নিয়ে পরাজিত জীবন শেখালো!
অস্তাচল
দাগ ঝুলে আছে গণিতের প্রকীর্ণ ফ্রেমে
জরাজীর্ণ পাশ-দেয়ালের ওম লেপ্টে যায় সূর্য সাম্পান
সন্ধ্যা পোড়াবো বলে এঁকে গেছি পূরোটা আকাশ
ভালো থাকা চারপাশে কোমলতা ছড়াচ্ছে ঘুম।
কলহের সীমান্তে গিয়ে কখনো যদি হয় ফেরা
ফেরারি এই শহরে কে আঁকবে রোদ্দুর – এতোটা যতনে?
পিপাসার রেশ রয়ে গেছে ঠোঁটের কার্ণিশে তবু।
ঘুমন্ত জিরাফের গ্রীবা এঁকেছে নৃশংস হত্যাযুগ
অরণ্যই জানে শোক,পোড়ানো আগুনের প্রবলতা।
জ্যামিতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে ফিরেছে গানের গুঞ্জন
প্রেতের প্রচ্ছদে নিরাভরণতা ।
আরো কিছু অদ্বৈতবাদ নেচে ওঠে মুদ্রিত কামে
অনাবিস্কৃত এই শব্দ জানুক আমি কেউ নই
জনারণ্য ছেড়ে মাতাল কুয়াশায় নেমেছি পথে
শিশিরের শব্দের যে গল্প লেখার সুর গেয়েছো খেয়ালে
পদচিহ্ন জেনেছে তার নাম আলোর আহ্বানে
আকাশ থেমেছে দূরে, অস্তাচলে।
একলা মেঘ ঝড়ে পড়ছে,দ্যাখো…
বাবা’র কবর থেকে প্রাপ্ত শূন্যতা
দরোজায় কড়া নেড়ো না
আমি বাড়ি নেই,ফিরবো না কোনদিন
কোরানের হরফে কোনদিন আর পড়বে না চোখ
নিশ্চুপ নিথর শরীরে মায়া রেখে সরে আছি বহুদিন।
তোমাদের কণ্ঠে তিলাওয়াত ধ্বনিত হয় কি? জানি না।
আমি তো গিয়েছি মিশে অগণিত সময়ের সত্য জৌলুসে, ঢের আগে।
শেষ এহরাম বাঁধা হলে পড়ে
শুয়েছি কাল-শয্যায়।
দরোজায় কোনদিন দাঁড়াবো না আর…
আমার চিন্হ ছড়িয়েছে নীল নীল মেঘের আকাশে
এমরান হাসান-কবি। জন্ম : ১৩ নভেম্বর ১৯৮৭, টাঙ্গাইল। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সম্মানসহ স্নাতকোত্তর। পেশায় প্রভাষক, বাংলা বিভাগ, স্টামফোর্ড কলেজ, ধানমণ্ডি,ঢাকা। প্রকাশিত গ্রন্থ : হাওয়াঘরের মৃত্যুমুদ্রা (২০২১)।